বরিশালে ডায়রিয়ায় ৪ মাসে ১৩ জনের মৃত্যু

বরিশাল বিভাগের ডায়রিয়া পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বিভাগের মধ্যে উপকূলীয় জেলা বরগুনায় প্রথম ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়। এ পর্যন্ত সর্বাধিক আক্রান্ত হয় দ্বীপ জেলা ভোলায়। গত জানুয়ারী থেকে এ পর্যন্ত বিভাগের বিভিন্ন স্থানে ডায়রিয়ায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তারপরও সার্বিকভাবে পরিস্থিতি আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে দাবি সংশ্লিষ্টদের। বরিশাল অঞ্চলের নদ-নদী খাল-বিলের পানিতে লবনাক্ততার পরিমান বেড়ে যাওয়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রতি বছর গরমের সময় এপ্রিল-মে মাসে ডায়রিয়া আক্রান্তের হার কিছুটা বেড়ে যায়। এবার গত এপ্রিল মাসে প্রথম ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দেয় উপকূলীয় জেলা বরগুনায়। এরপর পুরো বিভাগের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে ডায়রিয়া।
ডায়রিয়া চিকিৎসার অন্যতম প্রতিষ্ঠান বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে গত ২৪ ঘন্টায় ভর্তি হয়েছেন ডায়রিয়া আক্রান্ত ৩৯ জন রোগী। গত ১ সপ্তাহে ভর্তি হয়েছেন ৩৪৬জন এবং গত ১ মাসে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৪৩৬ জন ডায়রিয়া রোগী। সরকারি এই হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা এবং সরকারিভাবে ওষুধ ও আইভি স্যালাইন পেয়ে খুশী রোগী ও তাদের স্বজনরা। তবে হাসপাতালের মূল ভবনে ডায়রিয়া রোগীদের স্থান না হওয়ায় ভবনের বাইরে খোলা স্থানে সামিয়ানা টাঙিয়ে চিকিৎসা চলছে ডায়রিয়া রোগীদের।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডাররিয়া রোগী ও তাদের স্বজনরা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে তাদের দৈনন্দিন গৃহস্থালী কাজে ব্যবহার্য পানিতে লবনাক্ততা বেড়েছে। এছাড়া ডায়রিয়া আক্রান্ত হওয়ার তেমন কোন উৎস্য খুঁজে পাচ্ছেন না তারা।
বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মলয় কৃষ্ণ বড়াল বলেন, বরিশালের নদী-নদী ও খাল-বিলের পানিতে কলেরার জীবানু পাওয়া গেছে। এই পানি ব্যবহারে ডায়রিয়া আক্রান্তের হার বাড়ছে।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস বলেন, বরিশাল বিভাগে গত ২৪ ঘন্টায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮১৯জন। গত এক সপ্তাহে ৭ হাজার ৭৭জন এবং ১ মাসে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ হাজার ৭৯জন। গত পহেলা জানুয়ারী থেকে এ পর্যন্ত বিভাগে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৬ হাজার ৮১২জন মানুষ।
তিনি আরও বলেন, এবার ডায়রিয়ার প্রকোপ শুরু হয় বরগুনা জেলা থেকে। তবে বিভাগে সর্বাধিক ১১ হাজার ৭০২ জন আক্রান্ত হয়েছে ভোলায়। গত জানুয়ারী থেকে বিভাগের মধ্যে বরিশাল জেলায় ৫জন, পটুয়াখালীতে ৪জন, বরগুনায় ৩জন এবং ভোলায় ডায়রিয়া আক্রান্ত ১জনসহ মোট ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তারপরও সার্বিকভাবে বরিশালের ডায়রিয়া পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভাগের এই শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
বরিশাল বিভাগের ডায়রিয়া রোগীদের জন্য ৯০ হাজার ১১০টি আইভি স্যালাইন মজুদ রয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।